অপরাধীদের শিকড় সমুলে উপরে ফেলা হবে: ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন : সাংবাদিক সেলিম রেজাকে অপহরণের মামলার তদন্তে মাঠে নেমেছে সিআইডি

চুয়াডাঙ্গা হিজলগাড়ী প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি “জাতীয় গোয়েন্দা সংবাদ”এর জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার হিজলগাড়ী প্রতিনিধি সাংবাদিক সেলিম রেজাকে অপহরণের ঘটনার মুল কারণ ও প্রকৃত অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ প্রথম থেকেই জোরালো ভূমিকা পালন করছে। ইত্যেমধ্যেই অপহরণের মুল পরিকল্পনাকারী ও অপহরণের সাথে জড়িত বেশ কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। বাকিদের দ্রুত সময়ের মধ্যেই গ্রেফতার করার জন্য কাজ করছে পুলিশ। ইত্যেমধ্যেই এই মামলার তদন্তে মাঠে নেমেছে সিআইডি। আর অপরাধীদের শিকড় সমুলে উপরে ফেলা হবে বলে ঘোষনা দিয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গত ২৬ শে ফ্রেবুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে হিজলগাড়ী বাজার থেকে নিজ বাড়ীতে যাওয়ার পথে হিজলগাড়ী টু ছোটশলুয়া সড়কের কবরস্থানের সন্নিকট থেকে হিজলগাড়ী বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী ও হিজলগাড়ী প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সাংবাদিক সেলিম রেজাকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে মাঠের মধ্যে নিয়ে যায়। দ্রুত এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে ৫/৬টি গ্রামের মানুষজন ও স্থানীয় পুলিশ সেলিমকে উদ্ধারে মাঠে নামে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল) মোঃ তরিকুল ইসলাম সহ চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তোজাম্মেল হক সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একাধিক টিম। দেড় ঘন্টা ব্যাপি পুলিশ জনতার শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযানের এক পর্যায়ে অপহরনের স্থান থেকে প্রায় ৩ কি.মি দুরে ডিহি কৃষ্ণপুর মানিকতলার মাঠে অপহরণকারীরা তাকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এঘটনায় মুহুর্তের মধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়। অপহরণের প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও অপরাধীদের সনাক্তের জন্য জোরালে ভাবে মাঠে নামে পুলিশ। ৫ ই মার্চ এ ঘটনায় সাংবাদিক সেলিম রেজার বড় ভাই মিলন হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশের গোয়েন্দা অনুসন্ধানের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৭ ই মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ্সআই মাসুদ পারভেজ এই অপহরণের মুল পরিকল্পনাকারি হিজলগাড়ী বাজার পাড়ার সুন্নত আলীর ছেলে সাইফুল আজম মিন্টু ও একই পাড়ার মৃত শাহাবদ্দিন ডাক্তারের ছেলে শাহিন ওরফে জুন্নুনকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে। পুলিশের গোয়েন্দা অনুসন্ধানের প্রাপ্ত তথ্যে সাইফুল আজম মিন্টু শুধু সাংবাদিক সেলিম রেজাকে অপহরণের মুল পরিকল্পনাকারিই নয় তার বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজি,ছিনতাই,ডাকাতি,হত্যা কাজে সহযোগিতা সহ সন্ত্রাসীদের লালন পালন করার মত বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। মিন্টু ও শাহীন এলাকায় সন্ত্রাসীদের অভয়রন্যে পরিনত করে এলাকায় তাদের রাজত্ব কায়েম করতে চেয়েছিল। তার জন্য হিজলগাড়ী বাজারে তৈরী করে রেড হাউজ নামক একটি সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে মিন্টু ও শাহীন সন্ত্রাসী বাহিনীর জন্য সদস্য সংগ্রহ করতে থাকে। তবে সেখানে বাঁধা হয়ে দাড়াই সাংবাদিক সেলিম সহ স্থানীয় সাংবাদিকরা। তাই সাংবাদিক সেলিমকে অপহরনের পর মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে স্থানীয় সাংবাদিকদের দমানোর পরিকল্পনার অংশ হিসাবে সেলিমকে অপহরণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল এ বিষয়টি এখন পুলিশের কাছে পরিস্কার। মিন্টু ও শাহীনকে গ্রেফতারের পর রেড হাউজ সহ তাদের অন্য সহযোগিদের সর্বক্ষনিক নজরদারিতে রেখেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। সাংবাদিক সেলিমকে অপরহণের সাথে জড়িত মুল পরিকল্পনাকারী সহ তাদের বেশ কয়েকজন সদস্যকে পুলিশ ইত্যেমধ্যেই গ্রেফতার করেছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি অপহরণকারীদের গ্রেফতারের জন্য জোরালে ভাবে মাঠে নেমেছে পুলিশ। এদিকে মামলার তদন্ত কার্যক্রম আরো বেগবান করার জন্য ইত্যেমধ্যেই মাঠে নেমেছে সিআইডি। এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন,সাংবাদিক সেলিম রেজাকে অপহরণের মুল নায়ক মিন্টু ও তার বেশ কয়েকজন সহযোগিকে ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধীদের শিকড় সমুলে উৎপাটন করা হবে।